ব্যস্ত এখন নৌকার কারিগররা

বন্যায় যাতায়াতের ভরসা নৌকা। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। প্রতিবারের মতো এই সময়ে জেলায় নৌকার চাহিদা বেড়েছে। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার কারিগররা।
জেলার সিরাজদীখান উপজেলার নিচু অঞ্চলের বাসিন্দারা যাতায়াত করে নৌকায় করে। হাট-বাজার থেকে মালামাল কেনা-বেচা, জমি থেকে ধান-পাট কেটে আনা নেওয়ায় ডিঙ্গি নৌকার ব্যবহার হয়। তাছাড়া, পুরো বর্ষা মৌসুমে নদ-নদী আর খাল-বিলে নৌকায় করে দিনরাত মাছ শিকার করছেন জেলেরা। উপজেলার নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দারা নৌকায় খেয়া পারাপার থেকে শুরু করে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন।
উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে নৌকার বাজার। একইসঙ্গে সিরাজদীখান বাজার ও তালতলা বাজারেও বিক্রি হচ্ছে নৌকা। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ছুটে আসছেন এখানে।
উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ মণ্ডল ৩০ বছর ধরে নৌকা তৈরি করে আসছেন।
তিনি জানান, হঠাৎ করেই বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়ায় নৌকা বিক্রি বেড়েছে। এখন তারা চাম্বল ও কড়ই কাঠের নৌকা তৈরি করেন। প্রতিটি নৌকার দৈর্ঘ্য ৮ থেকে ১২ হাত পর্যন্ত। তবে কারো প্রয়োজন হলে আরও বড় নৌকা তৈরি করে দেন। ৮ হাতের একটি নৌকা বাজারে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার ও ১০ হাতের নৌকা ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বাজারে বিক্রি হয়। দিনে ১০ থেকে ১২টি নৌকা বিক্রি করা সম্ভব হয়।
তিনি আরও জানান, শুধু বর্ষা এলেই তিনি নৌকা তৈরি করেন। বছরের বাকি সময় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নৌকার কারিগর দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে হাটে নৌকার যে কদর ছিল এখন তা নেই। তবে বর্ষার ভরা মৌসুমে কিছু পাইকারি ব্যবসায়ীরা ও খুচরা ক্রেতা আসার কারণেই এই শিল্প এখনও কিছুটা হলেও টিকে আছে।’
নৌকার ব্যাপারী ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘এই ব্যবসা আগের মতো নেই। কাঠ ও মজুরির দাম বেড়ে যাওয়া লাভ তেমন হয় না। আবার চাহিদও তো আগের চেয়ে কম।’